সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন
মো নাহিদ হাসান নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
কাঁদছেন নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের পাতইল গ্রামের অসহায় গরিব বর্গা চাষী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শ্রী বিরসা সরদারের ছেলে তারানু সরদার ও কুশমইল গ্রামের মৃত- মজিবুর রহমানের ছেলে মিঠন। কাঁদার কারণ হচ্ছে তাদের একমাত্র সম্বল কষ্টে রোপনকৃত সাড়ে ৫ বিঘা জমির আমন ধান প্রতিপক্ষরা তাদের সর্বশান্ত করতে কিটনাশক প্রয়োগ করে ঝলসিয়ে দিয়েছে। প্রতিপক্ষরা জোরেসোরে বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াতেন ধান রোপন করলেও ঘরে তুলতে পারবে না।
এ বিষয়ে জমির মালিক মোসাঃ উম্মে কুলসুমের স্বামী পোরশা উপজেলার নোনাহার গ্রামের মোঃ সামসুল হক শাহ বিচার চেয়ে থানায় লিখিত আবেদন দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজিনগর ইউনিয়নের পাতইল মৌজার ১৪ জেএল নম্বরের খতিয়ান নং ২৯, দাগ নং ৩৭৬, পরিমান ১ একর ৮৭ শতাংশ সম্পত্তি পোরশা উপজেলার নোনাহার গ্রামের সামসুল হক শাহ্্ এর স্ত্রী উম্মে কুলসুম ওয়ারিশ সূত্রে মার সম্পত্তি প্রায় ২০ বছর যাবত ভোগ দখল করে আসছেন। তাদের বর্গা চাষী পাতইল গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তারানু সরদার খেয়ে না খেয়ে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে এবং কুশমইল গ্রামের মিঠন ২ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছিলেন। গত ১০ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১২টার দিকে অন্ধকারে ঘাস নিধনের কীটনাশক ছিটিয়ে সাড়ে ৫ বিঘার জমির আমন ধান সম্পূর্ন পুড়ে ফেলে।
এ বিষয়ে বর্গাচাষী তারানু সরদার বলেন, আমি খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করি। পানি সেচ, সার-বিষ সব দেওয়া শেষ হয়েছে। ধান বের হতে শুরু করেছে। ধান গাছও খুব সুন্দর হয়েছিল। এক মাসের মধ্যে আমার ধান আমার ঘরে উঠতো। অথচ শত্রুতা করে রাতের অন্ধকারে ঘাস মারা বিষ দিয়ে আমার ধান গাছ পুড়ে দিয়ে আমার স্বপ্ন আমার ভবিষ্যৎ সম্পূর্ন নষ্ট করে দেয়। কাটনা গ্রামের আলহাজ্ব গাজির উদ্দিনের ছেলে মোদাচ্ছের, পাতইল গ্রামের মোসলেমের ছেলে জাহাঙ্গীর ও হুমায়ন ইতি পূর্বে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় হুমকি দিয়ে আসছিল ধান রোপন করলেও ঘরে তুলতে পারবো না। আমার ধারণা তারাই এ কাজ করেছে।
তারানু সরদারের বাবা বিরসা সরদার বলেন, আমরা অনেক দিন যাবত এ জমি বর্গা চাষ করে আসছি। জাহাঙ্গীর ও হুমায়নরা এর আগে এ জমি বর্গা চাষ করতো। এখন তারা না পেয়ে এবং জমির প্রতিপক্ষ অংশীদারদের কথা মত এ কাজ করেছে।
আরেক বর্গা চাষী মিঠন বলেন, আমিও অনেক কষ্টে আবাদ করেছি। আমার সব ধান নষ্ট করে দিয়েছে। এখন আমি কি ধান ঘরে তুলবো। কিভাবে সংসার চালাবো। কিভাবে ঋন শোধ করবো। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
জমির মালিক উম্মে কুলসুমের স্বামী সামসুল হক শাহ বলেন, আমার স্ত্রী এ জমির মালিক। মার কাছ থেকে ওয়ারিশসূত্রে পেয়েছে। অথচ আমার স্ত্রী ভাই পোরশা উপজেলার বাংধারা গ্রামের মৃত- বদরুজ্জামানের ছেলে আবুল হোসেন বাবু মালিকানা দাবী করে। এ নিয়ে কোর্টে একটি বাটোয়ারা মামলা রয়েছে। তারই সূত্র ধরে তাদের পূর্বের বর্গাচাষীদের লেলিয়ে দিয়ে এ ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে। ধান পুড়ে দিয়ে আমার ও দেশের প্রায় দেড়শো মন ধান নষ্ট করেছে। যা টাকায় পরিমাপ করলে ২ লক্ষ টাকা হবে।
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি বা আমার ভাই এর কিছুই জানি না। জমি আমারও না আমার বাবারও না। আমরা আগে বর্গা চাষ করতাম। কিন্তু এখন করি না। আমরা কেন এ কাজ করবো। আমাদের উপর মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইন চার্জ হুমায়ন কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।